কিশোরগঞ্জের দর্শনীয় স্থান । কোথায় থাকবেন। কোথায় খাবেন। কিভাবে যাবেন ইত্যাদি।
“উজান-ভাটির মিলিত ধারা, নদী-হাওর মাছে ভরা” হাওর-বাওরের শহরে আপনাকে আমন্ত্রণ। ঢাকা বিভাগের সর্বশেষ জেলা এবং ২য় বৃহৎ জেলা। কিশোরগঞ্জের দর্শনীয় স্থান সহ অসংখ্য তথ্য দিয়ে সাজিয়েছি এই পেইজ টি।।
পরিচিতিঃ
হাওর-বাওর ও সমতলভূমির বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রাকৃতির একটি বিস্তীর্ণ জনপদ হলো কিশোরগঞ্জ। কিশোরগঞ্জ জেলা হাওর বাওরের জন্য বেশি পরিচিত। কিশোরগঞ্জের ইতিহাস সুপ্রাচীন। এই জেলায় রয়েছে বিশাল এতিহ্য। যেমন- লোকজ সংগীত, পালা, কীর্তন, কিপ্সা, জারী, বিয়ের প্রবাদ-প্রবচন, পুঁথি, টপ্পা, নৌকা বাইচের গান, হাস্য রসাত্মক শোক ধাঁ ধাঁ ইত্যাদি। ১৩টি উপজেলা নিয়ে এই শহর গঠিত। কিশোরগঞ্জের অর্থনীতির চালিকা শক্তির অনেকটা হাওরের উপর নির্ভর করে। হাওরের প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। যা দেশের চাহিদার লভ্যাংশ পূরণ করতে সক্ষম। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, কালনী, ধনু, নুরসুন্দা, বাউরি, ঘোড়াউত্রা ইত্যাদি অসংখ্য নদীর সংযোগ কিশোরগঞ্জে।
যেভাবে যাবেন-
আপনি যে এলাকা থেকে কিশোরগঞ্জে আসতে চাচ্ছেন। সেই এলাকার নাম এবং যেখানে যাবেন (গন্তব্যস্থল) সিলেক্ট করে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেইজে সার্চ করুন। আমাদের ওয়েবসাইট (কেমনে যাবো ডট কম)-এ পাবেন, বাস কাউন্টার লোকেশন এবং ফোন নাম্বার, বাসের ভাড়া, বাসের ধরণ (এসি / নন-এসি) এবং সক্ষিপ্ত ইতিহাস।
কিশোরগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
আপনার ভ্রমণ তৃষ্ণা মেটাতে এখানে অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্য, হাওর-বাওর, ঐতিহ্য স্থাপনা রয়েছে এই শহরে।
কিশোরগঞ্জের দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে রয়েছে-
বালিখলাঃ
সম্প্রতি অধিক জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানের মধ্যে জনপ্রিয় স্থান বালিখলা। দুই পাশে পানি আর পানি মাঝখানে সরু একটি রাস্তা। প্রায় ৩ কিলোমিটার এই রাস্তাটি দৈর্ঘ্য। ভ্রমণপিপাসুদের মনে জায়গা করে নিয়েছে এই বালিখলা রাস্তাটি দুই পাশে হাওরের পানি মাঝখানে চলাচল রাস্তা। রাস্তাটি অনেক উঁচু হওয়ায় হাওরে পানি বেশি থাকলে রাস্তাটি ডুবে না। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে একরামপুর সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে ১ ঘণ্টায় চলে যেতে পারবেন। বালিখলাতে হাওররে নদীতে বোট নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
নিকলী হাওরঃ
কিশোরগঞ্জ নিকলী উপজেলায় নিকলী হাওর অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ থেকে ২৫ কি.মি দূরে অবস্থিত এই নিকলি হাওর। অসংখ্য মাছ পাওয়া যায় িএই হাওরে। স্বচ্ছ পানির খেলা, জেলেদের মাছ ধরা অপরূপ এই দৃশ্য মনে এক আনন্দ নিয়ে আসে।
মিঠামইন হাওরঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন একটি উপজেলা। এটি একটি হাওর এলাকা এবং প্রাচীন জনপদ। মিঠামইনে রয়েছে নানার রকম ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা এবং হাওর। কিশোরগঞ্জ রেলষ্টেশন বা বাস স্টেশন থেকে রিক্সা/ইজিবাইক দিয়ে একরামপুর তাপর লোকা সিএনজি করে চামড়া ঘাটা। সেখানে সারাদিন বোট নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
কুতুব শাহ মসজিদ, অষ্টগ্রামঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে কুতুব মসজিদ বা কুতুব শাহ মসজিদ অবস্থিত। মসজিদটিতে রয়েছে ৫টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের কার্নিশ বক্রাকার, মসজিদের দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন করুকাজ। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে সুলতানী আমলের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনা হিসাবে এর সুখ্যাতি রয়েছে। কুলিয়াচর লঞ্চঘাট হতে জনপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়ায় অষ্টগ্রাম যাওয়া যায়।
অষ্টগ্রাম হাওর, কিশোরগঞ্জ
অষ্টগ্রাম হাওর কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ সদর থেকে অষ্টগ্রামের দূরত্ব প্রায় ৬০ কি.মি। এই হাওরে উত্তাল বাতাস, মাঝিদের গান, জেলেদের, ব্যস্ততা, ছোট ছোট নৌকায় মানুষের যাতায়াত, সব কিছু মিলিয়েই চারপাশটা হয়ে উঠে দেখার মত। তবে শুধু বর্ষা নয়, যখন পানি নেমে যায় তখন ভিন্ন রূপে এই হাওর জেগে উঠে।
গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি, হোসেনপুরঃ
জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই তবু কালের সাক্ষী হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলায় গোবিন্দপুর ইউনিয়নে অবস্থিত গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি। কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নে । কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে মাত্র ১১ কি.মি দূরত্বে অবস্থিত।
নরসুন্দা লেকসিটিঃ
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বুক চিরে বয়ে চলা নরসুন্দা নদীকে কেন্দ্র করে নরসুন্দা লেকসিটি গড়ে তোলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ থেকে ২০ টাকা রিকশা ভাড়ায় সরাসরি মুক্তমঞ্চ যেতে পারবেন।
এগারসিন্দুর দুর্গঃ
কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে ২২ কি.মি দূরে অবস্থিত এই ঈশা খাঁর স্মৃতি বিজড়িত এই দূর্গের অবস্থান। ১১টি ছোট বড় খাল বা নদী এই গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পরবর্তীতে এই জায়গা এগারসিন্দুর নামে পরিচিত পায়।
দিল্লির আখড়াঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে প্রায় সাড়ে চারশত বছরের পুরনো দিল্লির আখড়া অন্যতম। এই অঞ্চলের মনোরম একটি হাওরাঞ্চল মিঠামইন্ উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের দিল্লির আখড়া অবস্থান। কিশোরগঞ্জ শহরের একরামপুর মোড় থেকে বালিখোলা অথবা মরিচখালি বাজারে এসে ট্রলার বা নৌকা রিজার্ভ নিয়ে দিল্লির আখড়া দেখতে যেতে পারবেন।
কবি চন্দ্রবতী মন্দিরঃ
কবি চন্দ্রবতী বাংলা ভাষায় প্রথম মহিলা কবি হিসাবে স্বীকৃত। কবি চন্দ্রবতী মন্দিরটি অষ্টভুজাকৃতির এবং এর উচ্চতা প্রায় ৩২ ফুট। মন্দিরের নিচতলায় আছে একটি কক্ষ রয়েছে। কক্ষের ভেতরে ৭টি কুলুঙ্গি রয়েছে। কবি চন্দ্রবতী মন্দির দেখতে যেতে হলে প্রথমে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে আসতে হবে।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুঃ
সড়কপথে ভৈরত ও আশুগঞ্জের মধ্যে অবাধ যোগাযোগের জন্য মেঘনা নদীর উপর নির্মিত নান্দ্যনিক এক সেতুর নাম সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু। ভৈরব রেলষ্টেশন থেকে রিকশা নিয়ে নজরুল ইসলাম সেতু ঘুরে দেখতে পারেন।
পাগলা মসজিদঃ
কিশোরগঞ্জ জেলা শহর হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় আড়াইশ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ থেকে ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে পাগলা মসজিদে ঘুরে আসতে পারেন।
ইটনা হাওরঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর উপজেলাগুলোর মধ্যে ইটনা অন্যতম। ইটনা হাওর রয়েছে ইটনা শাহী মসজিদ। কিশোরগঞ্জ থেকে ইজিবাইক নিয়ে ৫ টাকা ভাড়ায় কিংবা ৫মিনিট পায়ে হেঁটে আসতে হবে শহরের একরামপুর মোড়।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানঃ
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ এর গাইটেল থেকে ইজিবাইক নিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে।
জঙ্গলবাড়ি দূর্গঃ
জঙ্গলবাড়ি দূর্গ কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে ৭কি.মি দূরে করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নে অবস্থিত। জঙ্গলবাড়ি দূর্গ-এ যা দেখতে পাবেন- দরবার হল, ঈশা খাঁর মসজিদ, ঈশা খাঁর মসজিদ ইত্যাদি।
সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িঃ
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা থেকে মাত্র ৭ কি.মি দূরে মসুয়া গ্রামে অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়ি রয়েছে।
যেখানে রাত্রিযাপনঃ
- ২০০ টাকার রুম থেকে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট অবধি ভাড়া পাবেন। তন্মধ্যে হোটেল রিভারভিউ (স্টেশন রোড, কিশোরগঞ্জ) । হোটেল উজাভাটী (আবাসিক, স্টেশন রোড, কিশোরগঞ্জ), হোটেল সাহিনা (আবাসিক, ভাগলপুর, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ)। এবং হোটেল ফিরোজ (স্টেশন রোড, কিশোরগঞ্জ), হোটেল নরসুন্দা (আবাসিক, কিশোরগঞ্জ), হোটেল গাংচিল, ভৈরব) ইত্যাদি।
- রুম বুকিং করতে পারেন – বুকিং রুম।
যেখানে খাবেনঃ
- কিশোরগঞ্জ এর খাবার? বিখ্যাত খাবার বালিশ মিষ্টি। হাওর-বাওর এলাকায় নানান মাছের উৎসব। মাছ জনপ্রিয় খাবার কিশোরগঞ্জের।
- এই শহরে দু’কদম হাটলেই বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট, ক্যাফে, হোটেলে খাবার জুটে।
কোথায় গাড়ি পাব? কাউন্টার কোথায়? গাড়ি না পেলে কী করবো? রাতে কী গাড়ি পাব? থাকার জায়গা পাব? রেস্টুরেন্ট খোলা থাকবে?
- কিশোরগঞ্জ যে প্রান্তে আসবেন না কেন? কিংবা যেখানে থাকেন না কেন? আপনি খুব সহজেই আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। সব স্টেশনে আপনি কাউন্টার পাবেন । প্রতিটা ষ্টেশনে বিভিন্ন বাস কাউন্টার রয়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলে আপনার গন্তব্যের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারবেন।
- আপনার কাউন্টার খুঁজে পেতে আমাদের নিচের বাস কাউন্টার নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলে আপনাকে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে দিবে।
- বাস স্ট্যান্ড ২৪ ঘণ্টা যাতায়াত ব্যবস্থা খোলা থাকে। আপনি নিচের দিকে স্ক্রল করলে বাসের ঠিকানা পেয়ে যাবেন।
- প্রতিটা স্টেশনে, অলি-গলিতে আপনার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। উপরে লিংকে প্রবেশ করে রুম বুক করতে পারেন।
প্রাচীন স্থাপনা এবং হাওর-বাওর ভরা শহরে আপনাকে আবারও আমন্ত্রণ।