কোলকাতা ভ্রমণ । কলকাতার দর্শনীয় স্থান । কোথায় থাকবেন, খাবেন
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা বা কোলকাতা শহরে আপনাকে স্বাগতম। কোলকাতা ভ্রমণ হোক আনন্দের সাথে।
পরিচিতি- কোলকাতা ভ্রমণ
কলকাতা বা কোলকাতা যার আদি নাম ছিল কলিকাতা। যা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কোলকাতা শহর হুগলি নদীর (গঙ্গা) পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। কলকাতা বন্দরটি ভারতের প্রধান ও প্রাচীনতম সচল বন্দর । বর্তমানে যাকে আমরা কলকাতা শহর বলি সে কলকাতা শহর সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। এই শহরের কোলকাতা নামটির উৎপত্তি নিয়ে অনেক মতান্তর রয়েছে, উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হিন্দু দেবী কালীর ক্ষেত্র তথা কালীক্ষেত্রে থেকে কলকাতা নামটি উৎপত্তি।
কলকাতা
শহরে যারা শাসন করেছে প্রাক-ব্রিটিশ যুগ, সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী, বাংলার নবজাগরণ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন স্বাধীনতাত্তোর যুগ ইত্যাদি। কলকাতা শহর আয়তনে বড় হওয়ায় উত্তর কলকাতা, মধ্য কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, পূর্ব কলকাতায় ভাগ করা হয়। কলকাতা শহরের প্রধান অর্থনীতির উৎস ব্যবসা-বাণিজ্য (ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্য, ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী, কেবল ইস্পাত, চামড়া, টেক্সটাইল অলংকার, যুদ্ধ জাহাজ অটোমোবাইল, রেলওয়ে কোচ ও ওয়াগন, চা, কাগজ, ফার্মাকিউটিক্যাল, রাসায়নিক তামাক, খাদ্যসামগ্রী, পাটজাত দ্রব্য ইত্যাদি এবং ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টক এক্সচেঞ্জ। এই কলকাতা শহর মহানগরী তার সাহিত্যিক, শৈল্পিক ও বৈপ্লবিক ঐতিহ্যগুলি জন্য বিশ্ববিদিত।
যেভাবে যাবেন- কোলকাতা ভ্রমণ
আপনি যে এলাকা থেকে কোলকাতা আসতে চাচ্ছেন। সেই এলাকার নাম এবং যেখানে যাবেন (কলকাতা) সিলেক্ট করে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেইজে সার্চ করুন। আমাদের ওয়েবসাইট (কেমনে যাবো ডট কম)-এ পাবেন, বাস কাউন্টার লোকেশন এবং ফোন নাম্বার, বাসের ভাড়া, বাসের ধরণ (এসি / নন-এসি) এবং সক্ষিপ্ত ইতিহাস।
দর্শনীয় স্থান সমূহ- কোলকাতা ভ্রমণ
আকর্ষনীয় দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে রয়েছে-
ঐতিহাসিক স্থানসমূহ – কলকাতা
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল – কলকাতা,
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল স্মৃতিসৌধ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত। রাণী ভিক্টোরিয়ার একটি স্মৃতিসৌধ। রানী ভিক্টোরিয়া স্মরণে তাজমহলের ধাঁচে গড়ে তোলা সাদা মার্বেলের এক অনন্য ইমারত যার কারুকার্য পর্যটকদের মনে এক ভাবাবেগ সৃষ্টি করবে।
হাওড়া ব্রীজ বা রবীন্দ্র সেতু- কলকাতা,
রবীন্দ্র সেতুকে পূর্বে বলা হতো হাওড়া ব্রীজ। এটি হুগলি নদীর (গঙ্গা) উপর অবস্থিত। এটি কলকাতা ও হাওড়া শহরের মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী সেতুগুলির মধ্যে অন্যতম।
মার্বেল প্যালেস – কলকাতা
কলকাতার একটি দর্শনীয় ভবন মার্বেল প্যালেস। বাংলার শৌখিন জমিদার রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক বাহাদূর নির্মাণ করেছিলেন প্রসাদের মত বিরাট এক অট্টালিকা যা দেখলে পযটকদের ভালো লাগবে।
কলকাতা রেসকোর্স-
কলকাতা রেস কোর্স বা কলকাতার ঘোড়া দৌড়ের মাঠ। এটি কলকাতা ময়দানের দক্ষিণাংশের একটি বড় ঘোড়া দৌড়ের মাঠ। এটি ব্রিটিশ ভারতের প্রথম রেসকোর্স। এখানে ভারতের সবচেয়ে গৌরবমন্ডিত ঘোড়া দৌড় যেমন ক্যালকাটা ডার্বি ও রাণী এলিজাবেথ কাপ নিয়মিত আয়োজিত হয়।
রবীন্দ্র সদন- কলকাতা
রবীন্দ সদন বা রবীন্দ্রস্মরণী পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি প্রেক্ষাগৃহ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। যেখানে নাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নানা ধরণের বিনোদনমূলক প্রদর্শনী দেখতে পারা যায়।
প্রিন্সেস ঘাট – কলকাতা
প্রিন্সেস ঘাট হল কলকাতায় হুগলি নদীর (গঙ্গা) তীরে ব্রিটিশ যুগে নির্মিত িএকটি ঘাট। ঘাটটি মহামতি অশোকের শিলালিপির পাঠোদ্ধারকারী প্রাচ্যবিদ জেমস প্রিন্সেপের স্মৃতিতে নির্মিত হয়। কলকাতায় সবচেয়ে পুরনো দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এটি একটি।
ফোর্ট উইলিয়াম – কলাকাতা
কলকাতা শহরের হুগলী নদীর (গঙ্গা) তীরে অবস্থিত ফোর্ট উইলিয়াম একটি দূর্গ। প্রাচ্যে ব্রিটিশরাজ্যের সাময়িক শক্তির সবচেয়ে বড় নির্দশণ িএই বিশাল অট্টালিকা কলকাতা একটি আকর্ষনীয় জায়গা।
পার্কসমূহ, বাগান, উদ্ভিদ, পশু-পাখি ও জাদুঘর দর্শনীয় স্থান সমূহ
ফান সিটি পার্ক – কলকাতা
দুর্দান্ত সব রাইডের সমন্বয়ে গড়ে উঠা এই অ্যামিউজম্যান্ট পার্ক। যেখানে সকল ধরণের রাইড পাবে রাইডাররা।
সায়েন্স সিটি পার্ক – কলকাতা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দুনিয়ায় নানা বিষয় জানতে, দেখতে সায়েন্স সিটি পার্কের তুলনায় হয় না। যেখানে রয়েছে বিজ্ঞান সম্পর্কিত অনেক স্মৃতি।
নিকো পার্ক – কলকাতা
বিশ্বের সর্বসেরা চিত্তবিনোদনমূলক পার্ক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে এই নিকো পার্ক।
ক্লাউন টাউন – কলকাতা
শিশুদের পছন্দ মাথায় রেখে তৈরি করা হয় এই ক্লাউন টাউন। যেখানে শিশুদের ভালো লাগার মত একটি বিনোদন কেন্দ্র। এটি কলকতার সর্বপ্রথম শিশুদের জন্য তৈরিকৃত উদ্যান।
নলবল বোটিং কমপ্লেক্স– কলকাতা
কলকাতার সবচেয়ে সুন্দর পিকনিকের জায়গা তবে নানা ধরণের নৌকায় চরে ভ্রমণের আনন্দ অনুভব করাও সুযোগ আছে।
অ্যাকোয়াটিকা – কলকাতা
কলকাতার রাজারাহাটের কোচপুকুরে অবস্থিত একটি জলজ উদ্যান বা ওয়াটার পার্ক নামে পরিচিত। এটি একটি জলজ উদ্যান।
বোটানিক্যাল গার্ডেন – কলকাতা
শিবপুরে হুগলী নদীর তীরে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদোগ্যে গড়ে উঠেছে এক নয়নাভিরাম পুষ্প শোভিত বোটানিক্যাল গার্ডেন।
জুওলোজিক্যাল গার্ডেন – কলকাতা
কলকাতার বিশাল প্রাণীভান্ডার নিয়ে গড়ে উঠা কলকাতার জুওলোজিক্যাল গার্ডেন যা এশিয়ার মধ্যে সর্বপ্রথম। বিশাল এলাকা ঘুরে ঘুলে প্রাণীদের সমারহ দেখার মত।
এগ্রি-হর্টিকালচ্যার গার্ডেন- কলকাতা
এগ্রি-হর্টিকালচার মূলত উদ্যান পালন সংক্রান্ত বাগান। এখানে রয়েছে গাছ-গাছালি ও নানা উদ্দিশের সমাহার।
আলিপুর চিড়িয়াখানা – কলকাতা
কলকাতার আলিপুরে গড়ে উঠা এই চিড়িয়াখানায় আছে নানা ধরনের পশু-পাখির অবস্থান। অসাধারন একটি চিড়িয়াখানা। পশু-পাখি প্রেমীদের মন ভুলিয়ে দিবে এই চিড়িয়িাখানা।
ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম – কলকাতা
কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দ্যা ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম হল এশিয়ার মধ্যে অন্যতম ও তাৎপর্যময় এক প্রাচীন জাদুঘর। এই জাদুঘরে রয়েছে মিশরীয় মমি, ডাইনোসর বা জীবাশ্ম কঙ্কালের যদি প্রত্যক্ষ দর্শন করতে চান তাহলে ঘুরে আসতে হবে কলকাতার এই ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম থেকে।
রবীন্দ্র ভারতী মিউজিয়াম – কলকাতা
গিরিশ পার্কের কাছে চিত্তরঞ্জন এভিন্যিউ এ অবস্থিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি। যেটা জোড়াসাকো ঠাকুরবাড়ি নামেও প্রচলিত। কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী মিউজিইয়্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আবিচ্ছেদ্য অংশ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সকল কাজকর্মের এক সংরক্ষণাগার।
বিড়লা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল মিউজিইয়্যাম – কলকাতা
দক্ষিণ কলকতায় গুরুসদয় রোডে বিড়লা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল মিউজিয়াম অবস্থিত এই বিড়লা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল মিউজিইয়্যাম। বিজ্ঞানের অজানা জানা ও বোঝার জন্য ছোট থেকে বড় সকলের ভালো লাগবে এই মিউজিয়ামে।
আশুতোষ মিউজিয়াম– কলকাতা
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত প্রতিষ্ঠিত ভারতের শীর্ষস্থানীয় জাদুঘরগুলো মধ্যে অন্যতম যেখানে ভারতের শিল্প কলা ও পুরানতত্ত্বের নানা কিছু সংরক্ষিত রয়েছে এই আশুতোষ মিউজিয়ামে।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থানঃ
কলেজ স্ট্রিট – কলকাতা
কলকাতায় অবস্থিত এই কলেজ স্ট্রিট। বইপড়ুয়াদের জন্য একটি তীর্থস্থান। পাঠ্যবই থেকে শুরু করে বেষ্ট সেলার ও যাবতীয় নতুন-পুরাতন বই পাওয়া যায় কলেজ স্ট্রিটে।
বেলুর মঠ – কলকাতা
গঙ্গা বা হুগলী নদীর তীরে অবস্থিত এই বেলুর মঠে রয়েছে স্বামী বিবেকান্দের বাড়ি ও নানা সাধকের সমাধি। তা ছাড়াও একটি প্রদর্শন শালা আছে যেখানে কীভাবে রামকৃষ্ণ মিশন তৈরি হয়ে সারা বিশ্বে সুমান কুড়িয়েছে তা দেখা যায়।
ইডেন গার্ডেন – কলকাতা
কলকাতার ইডেন গার্ডেন এটি ক্রিকেট দুনিয়ার এক বিখ্যাত স্টেডিয়াম। আরো আছে একটি বার্মিস প্যাগোডা। পুরো ইডেন গার্ডেন ঘুরে দেখতে পছন্দ করবে সবাই।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি – কলকাতা
শুধু কলকাতা নয় পুরো ভারত বর্ষের মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি এই ন্যাশনাল লাইব্রেরি।
কফি হাউজ – কলকাতা
“কফি হাউজের সেই আড্ডাটা এখন আর নেই” মান্না দে – এর জনপ্রিয় গান, সেই কপি হাউজ অবস্থিত কলকাতা শহরে।
যেখানে রাত্রিযাপন- কোলকাতা ভ্রমণ
- ৫০০ টাকার রুম বিলাসবহুল রুম ভাড়া পাবেন। তন্মধ্যে হোটেল মণীষ (পি-১, ডবসন লেন, দীঘা বাস স্ট্যান্ডের বিপরীতে), এ.ভি হোটেল প্রাইভেট লি. (বড় বাজার পুলিশ স্টেশনের নিকট, শম্ভু মল্লিক লেন, বড়বাজার, ক্যাপিট্যাল গেষ্ট হাউজ (১১-বি চৌরঙ্গি লেন, কলকাতা), হোটেল এয়্যারলাইনস (২ কাপালিতলা লেন, বৌ বাজার), হোটেল ডাউনটাউন (আর.এ.এ ১/১, ভিআইপি রোড তেঘড়িয়া), হোটেল ওরিয়েন্ট্যাল (৯-এ, মারকিউইস রোড, পার্ক স্ট্রীট) ইত্যাদি ইত্যাদি।
- রুম বুকিং করতে পারেন – বুকিং রুম।
যেখানে খাবেন- কোলকাতা ভ্রমণ
- কলকাতা-এর খাবার? ———> এই শহরে বাঙালিদের প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ।
- যে খাবার এখানে বেশি জনপ্রিয় রসগোল্লা, সন্দেশ, মিষ্টি দই ইত্যাদি। মাছের মধ্যে চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ ইলিশ মাছ। পথখাদ্যের মধ্যে বেগুনি, রোল, চিকেন, মাটন, এগ বা সবজি, ফুচকা বিশেষ জনপ্রিয়।
- এই শহরে দু’কদম হাটলেই বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট, ক্যাফে, হোটেলে খাবার জুটে।
পছন্দের কেনাকাটা- কোলকাতা ভ্রমণ
- কলকাতার পুরুষদের মধ্যে পাশ্চাত্য পোশাক পরার চল থাকলেও মহিলাদের মধ্যে সাধারণত ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরিধানের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কলকাতায় পুরুষরা শার্ট, টি-শার্ট, ট্রাউজার্স, জিন্স প্রভৃতি পোষাক পড়তে অভ্যস্ত।
- কলকাতায় যথেষ্ট পরিমাণ বড় বড় উন্নতমানের শপিং মল রয়েছে। সুলভ মূল্যে কেনাকাটা হোক আপনার কলকাতা শহরে।
কোথায় গাড়ি পাব? কাউন্টার কোথায়? গাড়ি না পেলে কী করবো? রাতে কী গাড়ি পাব? থাকার জায়গা পাব? রেস্টুরেন্ট খোলা থাকবে?
- কলকাতায় যে প্রান্তে আসবেন না কেন? কিংবা যেখানে থাকেন না কেন? আপনি খুব সহজেই আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। সব স্টেশনে আপনি কাউন্টার পাবেন। প্রতিটা ষ্টেশনে বিভিন্ন বাস কাউন্টার রয়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলে আপনার গন্তব্যের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারবেন।
- বাস স্ট্যান্ড ২৪ ঘণ্টা যাতায়াত ব্যবস্থা খোলা থাকে। আপনি নিচের দিকে স্ক্রল করলে বাসের ঠিকানা পেয়ে যাবেন।
- প্রতিটা স্টেশনে, অলি-গলিতে আপনার থাকার ব্যবস্থার য়েছে। উপরে লিংকে প্রবেশ করে রুম বুক করতে পারেন।