নারায়ণগঞ্জ হোটেল । ইতিহাস । বিখ্যাত খাবার, ব্যক্তি । পূর্ব নাম কি ও দর্শনীয় স্থান ইত্যাদি
শতবছরের ঐতিহ্য কইকারটেকের পুতা মিষ্টি খেতে চাইলে, আপনাকে নারায়ণগঞ্জ জেলায় স্বাগতম।
পরিচিত –
নারায়ণগঞ্জ জেলা ঢাকা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার অববাহিকায়; পাললিক মাটির সমতল ভূমিতে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ শহর। ১৮৮২ সালে নারায়ণগঞ্জ কে মহকুমায় ঘোষণা করা হয় এবং ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ কে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি ঢাকা বিভাগের মধ্যাঞ্চলের একটি জেলা। আমাদের অধিক প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ সোনারগাঁও এ জেলায় অবস্থিত, বিখ্যাত “শীতলক্ষ্যা নদীর” পাড়ে নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর অবস্থিত। বাংলাদেশের সব চেয়ে ছোট জেলা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা। পাট শিল্পের জন্য এই জেলা বিখ্যাত। এই জেলাকে প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলে থাকে। প্রচুর পরিমাণে সোনালী আশঁ উৎপাদন হয় বলে একে এই নামে ডাকা হয়।
নামকরণ –
“বিকন লাল পান্ডে ওরুফে বেণুর ঠাকুর বা লক্ষী নারায়ণ” (১৭৬৬) সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন। তিনি মূলত এই অঞ্চলের মালিকানা নিয়ে নেন। “শীতলক্ষ্যা নদীর” তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন, দলিলের মাধ্যমে। তিনি এটি করেছিলেন মূলত, প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয় ভার বহনের জন্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে, এই অঞ্চলের নাম লক্ষী নারায়ণের নাম অনুকরণে নারায়ণগঞ্জ রাখা হয়।
ইতিহাস –
“বিকন লাল পান্ডে” ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে কয়েকটি মৌজা লিজ গ্রহণ করেন, (১৭৬৬) সালে। এটি পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ নগরের প্রতিষ্ঠিত হয়। ২৭,৮৭৬ জন জনসংখ্যা অধ্যুষিত ৪.৫ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে; নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা গঠন করে ব্রিটিশ সরকার ১৮৭৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। ৮ জন নির্বাচিত ও ৪ জন মনোনীত কমিশনার নিয়ে, এই পৌরসভার যাত্রে শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা শত বছরেরও বেশি সময় ধরে; ব্যবসা বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে। “শীতলক্ষ্যা নদীর” স্বচ্ছ পানি এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনকালে; এটি ব্যস্ততম বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠে। নারায়ণগঞ্জ মূলত, পাট ব্যবসার জন্য বিখ্যাত আর এটির পেছনে ভুমিকা রাকে সড়ক, ট্রেন ও স্টিমারের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। “জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ মালেহ” ১৯৫১ সালে প্রথম বাঙ্গালী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে, তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দর্শনীয় স্থান সমূহ –
অন্যান্য জেলার ন্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলায়ও রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। সেসব জায়গায়র মধ্যে অন্যতম কিছু জায়গায় হলো।
মেরি এন্ডারসনঃ
(১৯৩৩) সালে, কলকাতায় শিপইয়ার্ডে ১৫০ ফুট দীর্ঘ, বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালিত একটি জাহাজ নির্মান করা হয়; বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ গভর্নরদের জন্য। এই জাহাজের নাম করণ করা হয়েছিল, সেই সময়কার বাংলার গভর্নর “স্যার জন এন্ডারসনের” মেয়ে “মেরী আন্ডারসনের” নামে।
কিভাবে যাবেনঃ টেক্সি, রিক্সা, বাস কিংবা অটোতে করে সেখানে যেতে পারবেন। এটি উপজেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে, কুতুবপুর পাগলা বুড়িগঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত।
বাংলাদেশ লোক শিল্প জাদুঘরঃ
বাংলাদেশে লোক ও কারু শিল্প জাদুঘর (১৯৭৫) সালে, জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধিনে এটি চলে এখন। এর উদ্যোগে, লোকশিল্প উদযাপনে এক মাস ধরে একটি মেলা বসে। এটি চারুকলা বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থা করে।
কিভানে যাবেনঃ মেঘনা নদি পথে চাইলে, সোনারগাঁও উপজেলায় বৈদ্যের বাজার লঞ্চঘাট হয়ে ; রিক্সা অথবা সি.এন.জি যোগে যেতে পারবেন। অন্যদিকে, বাসস্ট্যান্ড থেকেও একিভাবে যাওয়া যাবে রিক্সা/সি.এন.যোগে।
জিন্দা পার্কঃ
জিন্দা পার্কের যাত্রা শুরু হয় (১৯৮০) সালে প্রায় ৫,০০০ সদস্যের পরিবার “অগ্রগতি পল্লী সমিতির” মাধ্যমে। প্রায় ২৫০ প্রজাতির ১০,০০০ এর বেশি গাছ-গাছালি, বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে, ৫টি জলধারা, অসংখ্য পাখ-পাখালির কলকাকলী সবকিছু নিয়ে এটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে।
কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে এটির দূরত্ব ৩৭ কিলোমিটার। ঢাকা হতে কাঁচপুর দিয়ে টঙ্গী মিরের বাজার হয়ে, জিন্দা পার্কে আসা যায়।
গিয়াসউদ্দিন আজমসশাহঃ
প্রথম ইলিয়াস শাহি রাজবংশের ৩য় সুলতান ছিলেন। তিনি (১৩৮৯-১৪১০) সালে শাসন করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল আজম শাহ। গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ নাম ধারণ করেন সিংহাসন লাভের পর। কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক বাসে করে যেতে পারবেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে রিক্সা/সি.এন.জি দিয়ে যেতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার।
পানাম নগরঃ
প্রায় ৪৫০ বছর আগে, বার ভূইয়ার দলপতি ঈশা খাঁ ১৫ শতকে বাংলার প্রথম রাজধানী স্থাপন করেছিলেন সোনারগাঁওতে আর এর ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে পানাম সিটি। ১০০ টি ধ্বংসপ্রায় নিয়ে ঐতিহাসিক শহরের একটি পানামা নগর। প্রাচীন সোনারগাঁও তিন নগরের ( বড় নগর, খাস নগর, পানামা নগর) মধ্যে ছিল সব থেকে আকর্ষনীয়।
কিভাবে যবেনঃ রিক্সা ও অটোরিকশা যোগে যেতে পারবেন সোনারগাঁও মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে। এক্ষেত্রে ভাড়া ১০-২০ টাকা যেতে পারবেন। সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর থেকেও ৫ মিনিট হেঁটে পানাম সিটিতে যেতে পারবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় অসংখ্য বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ব্যক্তির নাম তুলে ধরা হলোঃ
জ্যোতি বসুঃ
তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ। তেইশ বছর তিনি পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের আদিনিবাস ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বারদী গ্রামে। এছাড়াও তিনি, (১৯৬৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল) পর্যন্ত সিপিআই(এম) দলের পলিটব্যুরো সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যু হয় ২০১০ সালে। তাঁর স্বরণে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট “কমরেড জ্যোতি বসু নাগরিক পর্ষদ” গঠন করা হয়।
মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেনঃ
মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন ছিলেন, বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটার। তাঁর জন্ম ১ জুন,১৯৭৬ সালে। তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে ক্রিকেটে তাঁর অন্তভূক্তি করান (১৯৯৩)সালে। জাতীয় দলে সূযোগ লাভ করেন, (১৯৯৬) সালে। ১৯৯৯ সালে, ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথম অংশগ্রহন করেন। তিনি ঘোরায়া ক্রিকেট ঢাকা বিভাগকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
আতাহার আলী খানঃ
বাংলাদেশ ক্রিকেটের, অন্যতম একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও মিডিয়াম পেসার হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি ফেব্রুয়ারীর ১০ তারিখ ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচক হিসেবেও আসীন রয়েছেন। তিনি ঘোরায়া লীগ দূরন্ত রাজশাহীর কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
আব্দুল আল রাকিবঃ
তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম একজন দাবা খেলোয়াড়। ২০০৭ সালে লাভ করেন ফিদে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব। তিনি হচ্ছেন চতুর্থ বাংলাদেশি গ্র্যান্ড মাস্টার। ২০০১ সালে প্রথম গ্র্যানমাস্টার নাভ করেন ২য় টি পান ২০০৪ সালে।
মোমেন মুন্নাঃ
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের সেরা ডিফেন্ডারের মধ্যে তিনি একজন বলে গণ্য করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬৮ সালের ৯জুন। তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ও আবাহনী দলের সাথে খেলেছেন। কোলকাতা ইস্ট বেঙ্গল দলেও খেলছেন। ১৯৯২ সালে তিনি আবাহনী দলের জন্য ২০ লক্ষ্য টাকা চুক্তি করে দেশীয় রেকর্ড করেন। পরবর্তীতে তিনি অবসর হয়ে আবাহনীর ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি মৃত্যু বরণ করেন ২০০৫ সালে।
যেভাবে যাবেনঃ
আপনি যে এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ আসতে চাচ্ছেন? যেমনঃ (ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ) আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেইজে “অনুসন্ধান” ঘরে সার্চ করুন। আমাদের ওয়েবসাইট (কেমনে যাবো ডট কম) এ পাবেন, বাস কাউন্টার লোকেশন এবং ফোন নাম্বার,বাসের ভাড়া,বাসের ধরন (এসি/নন-এসি)।
নারায়ণগঞ্জ গিয়ে থাকা ও খাওয়ার সুবিধার জন্য কিছু হোটেল ও রেঁস্তোরার তালিকা দেওয়া হলো।
- সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্ট(টেলিফোন, (০১৭৭৬৪১৪০১৫),
- হোটেল বিক্রমপুর(আবাসিক), ফোন- (০১৫৫৩৩৬১৭৩২),
- মেসার্স হোটেল শাপলা(আবাসিক), ফোন নং- (০১৮১৫২১৯৮৪৪),
- আনন্দ রেঁস্তোরা, সাং-১৪, এস এস রোড, (ফোন- ৭৬৩৩৫৩৭),
- ডমিনোজ পিৎজা ফ্রান্স রেঁস্তোরা, সাং-২১, বেইলি টাওয়ার চাষাড়া ( ফোন- ৭৬৩৫১৮০),
- চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, আলম খান লেন রোড ১, (ফোন-৭৬৪৫৬০৯),
- স্নোভার গার্ডেন এন্ড থাইফুড রেঁস্তোরা, মিউনিসিপই সুপার মার্কেট, বঙ্গবন্ধু রোড, (ফোন- ৭৬৩১২৬৫),
- ব্যাংকোয়িট রেঁস্তোরা, সাং-১৫২, শরীফ মার্কেট, (ফোন- ০১৮১৭৫০০৯৫২)।
- অনলাইনে বুকিং করতে এখানে ক্লিক করুন।
কোথায় গাড়ি পাব? কাউন্টার কোথায়? গাড়ি না পেলে কী করবো? রাতে কী গাড়ি পাব? থাকার জায়গা পাব? রেস্টুরেন্ট খোলা থাকবে?
- পঞ্চগড় ভ্রমণ করতে যে প্রান্তে আসবেন না কেন, কিংবা যেখানে থাকেন না কেন? আপনি খুব সহজেই আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। সব স্টেশনে আপনি কাউন্টার পাবেন। প্রতিটা ষ্টেশনে বিভিন্ন বাস কাউন্টার রয়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলে আপনার গন্তব্যের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারবেন।
- আপনার কাউন্টার খুঁজে পেতে আমাদের নিচের বাস কাউন্টার নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলে আপনাকে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে দিবে।
- বাস স্ট্যান্ড ২৪ ঘণ্টা যাতায়াত ব্যবস্থা খোলা থাকে। আপনি নিচের দিকে স্ক্রল করলে বাসের ঠিকানা পেয়ে যাবেন।
- প্রতিটা স্টেশনে, অলি-গলিতে আপনার থাকার ব্যবস্থার য়েছে। উপরে লিংকে প্রবেশ করে রুম বুক করতে পারেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলার ইতিহাস এর মতো বাংলাদেশের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহের তথ্য (কাউন্টার লোকেশন ও ফোন নাম্বার, ভাড়া, বাসের ধরণ (এসি / নন-এসি) এবং এরিয়ার পরিচিতি, যেখানে থাকবেন এবং খাবেন) পেতে এই লিংকে ক্লিক করুন।