বগুড়া । বগুড়ার দর্শনীয়স্থান, রাত্রিযাপন, বিখ্যাত খাবার সহ ইত্যাদি

প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধনের বর্তমান নাম মহাস্থানগড় যা বগুড়া জেলায় অবস্থিত। ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জনপদ বগুড়ায় আপনাকে আমন্ত্রণ। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার, প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানী, ঐতিহ্য স্থাপনা এবং বাণিজ্যিক  শহর।

পরিচিতিঃ

বগুড়া উত্তরবঙ্গের একটি শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর। এটি রাজশাহী বিভাগ এর অন্তর্গত। বগুড়াকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয়। এটি শিল্পের শহর। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের এক ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জনপদ গড়ে উঠেছিল এই বগুড়ায়। প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধনের বর্তমান নাম মহাস্থানগড় যা বগুড়ায় জেলায় অবস্থিত। বগুড়াকে ভৌগলিকভাবে ভূমিকম্পের বিপদজ্জনক বলয়ে অবিস্থত। তাছাড়া বগুড়া জেলা বরেন্দ্রভূমির অংশবিশেষ যা ধূসর ও লাল বর্ণের মাটির পরিচিতির জন্য উল্লেখ্য। এই জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮২১ সালে। মোট ১৩ টি উপজেলা রয়েছে বগুড়া জেলায়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতকে বগুড়া মৌর্য শাসনাধীনে ছিল। মৌর্য এর পরে গুপ্তযুগ আসে এর পরে শশাংক, হর্ষবর্ধন, যশোবর্ধন, পাল, মদন এবং সেনরাজ বংশ। পরবর্তীতে সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন বগড়া শাসক ছিলেন। তার নামানুসারে নামকরণ হয় বগুড়া। এখানে মান সম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। এই জেলা অর্থনীতি শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি নির্ভরশীল।



যেভাবে যাবেন

আপনি যে এলাকা থেকে বগুড়ায় আসতে চাচ্ছেন। সেই এলাকার নাম এবং যেখানে যাবেন (গন্তব্যস্থল) সিলেক্ট করে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেইজে সার্চ করুন। আমাদের ওয়েবসাইট (কেমনে যাবো ডট কম)-এ পাবেন, বাস কাউন্টার লোকেশন এবং ফোন নাম্বার, বাসের ভাড়া, বাসের ধরণ (এসি / নন-এসি) এবং সক্ষিপ্ত ইতিহাস।

দর্শনীয় স্থান-

আপনার ভ্রমণ তৃষ্ণা মেটাতে এখানে রয়েছে অনেক প্রাচীন স্থাপনা এবং আকর্ষণীয় নিদর্শন।
আকর্ষনীয়  দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে রয়েছে

মহাস্থানগড়ঃ

বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবিস্থত মহাস্থানগড়। প্রাচীন পুন্ড্রনগরীতে প্রায় ৪০০০ বছর পুরাতন স্থাপনা রয়েছে। বগুড়া শহর থেকে অটোরিকশা অথবা সিএনজি নিয়ে সরাসরি মহাস্থানগড় পরিদর্শন করতে পারবেন।

খেরুয়া মসজিদঃ

বগুড়ার শহর থেকে খেরুয়া মসজিদ প্রায় ২৫ কি.মি দূরত্ব। বগুড়া থেকে শেরপুর উপজেলায় নামার পর রিকসা অথবা সিএনজিযুগে খেরুয়া মসজিদে ঘুরে আসতে পারবেন। ১৫৮২ সালে জওহর আলী কাকশালের পুত্র মির্জা মুরাদ খান কাকশাল খেরুয়া মসজিদটি নির্মাণ করেন।

গোকুল মেধঃ

বগুড়া শহরের মহাস্থানগড় থেকে গোকুল মেধ ২কি.মি দূরত্ব। গোকুল মেধ বগুড়া সদরের গোকুল গ্রামে অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন। অনেকে আবার এটিকে লক্ষ্মীমন্দিরের মেধ নামেওর আখ্যায়িত করেছেন। ১৭২টি কুঠুরিকে বিভিন্ন তলে মাটি দিয়ে ভরাট করে নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমহ্রাসমান করে মূল ভিত্তিকে স্তরে স্তরে উর্ধগামী কুঠুরি নির্মাণ রীতিতে সাজানো হয়েছির যেন এগুলিকে সুউচ্চ মন্দির বা স্তূপের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

ভাসু বিহারঃ

জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান থেকে ৬কিলোমিটার দূরে বিহার গ্রামে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন ভাসু বিহার অবস্থিত। এটি ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ভাসু বিহারের প্রথম খনন কাজ করা হয়। চীনের বিখ্যাত পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এই স্থানকে “পো-শি-পোঃ বা “বিশ্ব বিহার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।



যোগীর ভবণঃ

বগুড়া জেলা হতে যোগীর ভবনের দূরত্ব মাত্র ১৭ কি.মি। বগুড়া পৌঁছে সিএনজি বা অটো রিকশায় বগুড়া কোটলাল রোড দিয়ে যোগীর ভবন পৌছানো যায়। জেলার কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নে প্রায় ৮০ একর জায়গার উপর কয়েকটি প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা সংগঠিত হয়ে যোগীর ভবন গড়ে উঠেছে।

ভীমের জাঙ্গালঃ

বগুড়া জেলা থেকে সিএনজি বা অটো  রিকশা ভাড়া নিয়ে ভীমের জাঙ্গালের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যায়। প্রাচীন বা মধ্যযুগের প্রথম দিকে উত্তর বাংলার বরেন্দ্র অঞ্চলে নির্মিত একটি সড়ক ও বাধ হল ভিমের জাঙ্গাল। ভিমের জাঙ্গালের বিস্তৃতি নিয়ে রয়েছে নানা দ্বিতম।

রানী ভবানীর বাপের বাড়িঃ

বগুড়া জেলা সান্তাহার থেকে ২০/৩০টাকা রিকশা ভাড়ায় রানী ভবানীর বাবার বাড়ি দেখতে যেতে পারবেন। জেলার সান্তাহারের ছাতিয়ানগ্রামে রানী ভবানীর জন্মগ্রহণ করেন। সংস্কার এবং সংরক্ষেণের অভাবে রানী ভবানীর বাপের বাড়ি আজ ধ্বংসের পথে।

পোড়াদহ মেলাঃ

বগুড়া জেলা সদরের চেলোপাড়ায় গোলাবাড়ি সিএনজি নিয়ে পোড়াদহ মেলায় যাওয়া যায়। জেলার গাবতলী উপজেলার ইছামতি নদী তীরবর্তী পোড়াদহ নামক স্থানে প্রতিবছর এক ঐতিহ্যবাহী লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়। শুরুতে পোড়াদহ মেলাকে সন্ন্যাসী মেলা নামে ডাকা হতো। কিন্তু পোড়াদহ নামক স্থানে মেলা আয়োজনের কারণে লোকমুখে পোড়াদহ জায়গার নাম প্রচার হতে থাকে। প্রতিবছর বাংলা সনের মাধ মাসের শেষ তিন দিনের মধ্যে আগত বুধবার অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার এই মেলার আয়োজন করা হয়।

বিহার ধাপঃ

বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে প্রায় ৪ কি.মি এবং ভাসু বিহার থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে বিহার ধাপের অবস্থান। বিহার ধাপ বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত প্রত্নতাত্ত্বি একটি স্থান। সাগর নদীর পাশ ঘেঁষা এই স্থাপনাটি  স্থানীয়দের কাছে তোতারম পন্ডিতের ধাপ বা তোতারাম পন্ডিতের বাড়ী নামেও সুপরিচিত।

পরশুরামের প্রাসাদঃ

বগুড়া শহরের ঠনঠনিয় বাসস্ট্যান্ড বা সাতমাথা থেকে সিএনজি বা অটো রিকশা ভাড়া নিয়ে পরশুরামের প্রাসাদ পৌঁছাতে পারবেন। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড়ের সীমানায় আবিষ্কৃত প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম এক নিদর্শনের নাম পরশুরামের প্রাসাদ।

মানকালীর কুন্ডঃ

বগুড়া ঝেলা হতে সিএনজি বা অটো রিকশা নিয়ে মানকালীর ঢিবি দেখতে যেতে পারবেন। শিবগঞ্জ উপজেলার রয়েছে প্রাচীন সভ্যতার এক অন্যতম নিদর্শন মানকালীর কুণ্ড।

যেখানে রাত্রিযাপনঃ

  • ৩০০ টাকার রুম থেকে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট অবধি ভাড়া পাবেন। তন্মধ্যে হোটেল নাজ গার্ডেন (সিলিপুর, বগুড়া, +8805162468), মম েইন হোটেল এন্ড রিসোর্ট (+880516204), পর্যটন মোটেল (বনানী মোড়, বগুড়া, +88051-66753), সেফওয়ে মোটেল (চার মাথা, বগুড়া), সেঞ্চুরি মোটেল (চাররাস্তার মাথা বগুড়া,)  ইত্যাদি।
  • রুম বুকিং করতে পারেন – বুকিং রুম।




যেখানে খাবেনঃ

  • বগুড়ার খাবার? >>> বগুড়া দইয়ের জন্য বিখ্যাত। এখানকার প্রায় হোটেলেই ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায়। এর মধ্যে  বগুড়ার সান্তাহারের টাকি মাছ ও কালোজিারর ভর্তা, ছোট মাছের চচ্চড়ি, ঝাল পোলাও, সেমাইর জর্দা, বগুড়ার দই, গরুর মাংসের আলুঘাঁটি, ক্ষীর, স্পঞ্জের মিষ্টি, মহাস্থানগড়ের চাউলের কটকটি, লাচ্ছা সেমাই, শিক কাবাব, মুরগি ও গরুর চাপ, লাল মরিচ, আঠা আলু ইত্যাদি খাবার বগুড়ার ঐতিহ্য খাবার।
  • বগুড়া শহরে দু’কদম হাটলেই  বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট, ক্যাফে, হোটেলে খাবার জুটে।

কোথায় গাড়ি পাব? কাউন্টার কোথায়? গাড়ি না পেলে কী করবো?  রাতে কী গাড়ি পাব? থাকার জায়গা পাব? রেস্টুরেন্ট খোলা থাকবে?

  • বগুড়া যে প্রান্তে আসবেন না কেন? কিংবা যেখানে থাকেন না কেন? আপনি খুব সহজেই আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। সব স্টেশনে আপনি কাউন্টার পাবেন । প্রতিটা ষ্টেশনে বিভিন্ন বাস কাউন্টার রয়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করলে আপনার গন্তব্যের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারবেন।
  • আপনার কাউন্টার খুঁজে পেতে আমাদের নিচের বাস কাউন্টার নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলে আপনাকে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে দিবে।
  • বাস স্ট্যান্ড ২৪ ঘণ্টা যাতায়াত ব্যবস্থা খোলা থাকে। আপনি নিচের দিকে স্ক্রল করলে বাসের ঠিকানা পেয়ে যাবেন।
  • প্রতিটা স্টেশনে, অলি-গলিতে আপনার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। উপরে লিংকে প্রবেশ করে রুম বুক করতে পারেন।

বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার, লাল মাটি, প্রাচীনদের বিভিন্ন স্থাপনা, ঐতিহ্য খাবার এবং মহাস্থানগড়ের মানুষের ভিড়ের  শহরে আপনাকে আবারও আমন্ত্রণ।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহের তথ্য (কাউন্টার লোকেশন ও ফোন নাম্বার, ভাড়া, বাসের ধরণ (এসি / নন-এসি) এবং এরিয়ার পরিচিতি, যেখানে থাকবেন এবং খাবেন) পেতে এই লিংকে ক্লিক করুন।

x